Description
অপরাজিত
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
নিশ্চিন্দপুর থেকে চলে যাওয়ার পর অপুর কাছে তার গ্রাম্য জীবনকে সীমাবদ্ধ লাগতে থাকে। অপু স্কুলে পড়তে চায়। ভর্তি হয় গ্রাম্য এক বিদ্যালয়ে। রোজ দু’ ক্রোশ পথ হেঁটে পড়তে যেত সে। তার এই হাঁটা পথেরও ছিল অন্যরকম কিছু গল্প। এই পথের কথা অপু পরে আর কখনও ভুলতে পারেনি। গ্রাম্য বালক অপু সেখান থেকে বোর্ড পরীক্ষা দিয়ে স্কলারশিপ নিয়ে ভর্তি হয় মহকুমার হাইস্কুলে।
মহকুমার বোর্ডিং স্কুলে অপুর সামনে উন্মোচিত হয় নতুন এক জগত। সেখানে সে সারাদিন তার অজানা সব বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করতে থাকে, খানিকটা বুভুক্ষুর মতো। অপুর দিগন্ত ক্রমেই বাড়তে থাকে। স্কুলের লাইব্রেরিতে বই দেখে সে দিশেহারা হয়ে যায়। সারা বিশ্বের সবকিছু সম্পর্কে সে জানতে চায়। যেতে চায় দুনিয়ার বিভিন্ন দেশে। তবে এখানেও মাঝেমধ্যে তার বাড়ির কথা মনে পড়ে। নির্জন বিকেলগুলোতে তার বাবার চেহারা, তার বোনের সাথে তার যত দুষ্টুমির কথা সে কল্পনায় দেখে। তার মার চেহারা না দেখে সে থাকতে পারে না। কয়েক বছর সেখানে পড়ার পর অপুর হাইস্কুলের পাট চুকায়। তখন অপুর প্রথম যৌবনের শুরু। তার সবসময় মনে হয় কী যেন একটা ঘটবে, তাই সে আশায় আশায় থাকে। হয়তো তা অজানার ডাক, যার কাছে বাদবাকি সবকিছুই তুচ্ছ।